প্রকাশিত: Sat, Mar 4, 2023 6:29 AM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 9:42 AM

অজ্ঞতার অহংকার

হাসান শান্তনু : দৈনিক আমার দেশে (এখন প্রকাশনায় নেই) প্রকাশের জন্য লেখা প্রতিবেদন। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে। লিখেছিলাম, ‘রবীন্দ্র জয়ন্তী’। পত্রিকার বানান সম্পাদনার বিভাগ থেকে কেটে শব্দগুলো করা হয়, ‘রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী’। প্রকাশের আগে বিষয়টি চোখে পড়ে। প্রতিবেদনটি আমার নামে লেখা (বাই নেম স্টোরি)। সঙ্গে নিজের নাম ছাপা হচ্ছে জেনে ‘জন্মজয়ন্তী’ শব্দের দায় নিতে চাইনি।  প্রধান প্রতিবেদককে বিনয়ের সঙ্গে বলি, জয়ন্তী মানে জন্ম সংক্রান্ত উৎসব। জয়ন্তীর আগে জন্ম যোগের দরকার পড়ে না। তিনি বার্তা সম্পাদককে বললে শব্দটি সংশোধিত হয়। পত্রিকায় ছাপা হয়, ‘রবীন্দ্র জয়ন্তী’। আমার দেশের ওই সময়ের প্রধান প্রতিবেদক কবি না হওয়ায় বিষয়টি খুব সহজে সমাধান করেন। আমাকে ধমক দেননি, ফেসবুকে আনফ্রেন্ড করেননি। শুধু কবি হওয়ায় আরেকজন তেমন কাণ্ড করেন। 

এবারের একুশের বইমেলার শুরুতে তার একটা বই আসে বাজারে। ফেসবুকে আমাকে একের পর এক বার্তা দেন, যেন তার ‘কাব্যগ্রন্থ’ নিয়ে কিছু লিখি। তাকে বারবার বলেছি, মানসিক, শারীরিকসহ সবদিক বিবেচনায় আমি জীবনের দুঃসহ সময়ের মুখোমুখি। এমন অবস্থায় কেউ কবিতার বইয়ের ভালো ব্যাখ্যা সাধারণত লিখতে পারেন না। তার ভাবটা এমন, তিনি ‘কিতাব’ লিখেছেন, আর দেশ-বিদেশের সব সংবাদকর্মী, সাংবাদিক সেটা নিয়ে লিখতে ‘বাধ্য’। তার থেকে রেহাই পেতে ‘তাত্ত্বিক’ ভান ধরি। বলি, ‘কাব্যগ্রন্থ’ বলার দরকার নেই। কাব্য মানেও কবিতার বই। এবার তিনি রেগে আগুন। তার মতো কবিকে শেখাতে যাওয়া। ভয়ানক দুঃসাহস। ফেসবুকে আমাকে ‘আনফ্রেন্ড’ করে সেই কবি এখন হয়তো বাংলা সাহিত্যে অমরত্ব লাভের পথে। প্রতিদিনের এ ধরনের আলোচনাকে যারা যৌক্তিক করতে পারেন না, সহনশীল হতে পারেন না, তারা কবি হন কীভাবে? অজ্ঞতার অহংকার সঙ্গে করে খুব বেশিদূর কি যাওয়া যায়? লেখক: সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে